بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
১.
الَرَ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَقُرْآنٍ مُّبِينٍ
আলিফ-লা-ম-র; এগুলো কিতাবের এবং সুস্পষ্ট কোরআনের আয়াতসমূহ।
২.
رُّبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ كَانُواْ مُسْلِمِينَ
কোন এক সময় কাফিররা আকাঙ্ক্ষা করবে বলবে, 'হায়! আমরা যদি মুসলিম হয়ে যেতাম'।
৩.
ذَرْهُمْ يَأْكُلُواْ وَيَتَمَتَّعُواْ وَيُلْهِهِمُ الأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
ছেড়ে দাও তাদেরকে, তারা খেয়ে নিক আর ভোগ করে নিক এবং (মিথ্যা) আশায় ব্যাপৃত থাকুক। অতি সত্বর তারা (তাদের আমলের পরিণতি) জানতে পারবে।
৪.
وَمَا أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلاَّ وَلَهَا كِتَابٌ مَّعْلُومٌ
আমি যে জনপদকেই ধবংস করেছি তাদের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় লিখিত ছিল।
৫.
مَّا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ
কোন জাতি তাদের নির্দিষ্ট সময়কে অগ্র-পশ্চাত করতে পারে না।
৬.
وَقَالُواْ يَا أَيُّهَا الَّذِي نُزِّلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌ
তারা বলে, ওহে ঐ ব্যক্তি যার প্রতি কোরআন নাযিল হয়েছে! তুমি তো অবশ্যই পাগল।
৭.
لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِالْمَلائِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে হাজির করছ না কেন?
৮.
مَا نُنَزِّلُ الْمَلائِكَةَ إِلاَّ بِالحَقِّ وَمَا كَانُواْ إِذًا مُّنظَرِينَ
যথাযথ কারণ ছাড়া আমি ফেরেশতাদেরকে পাঠাই না, (আর পাঠালে) তখন তাদেরকে (কাফিরদেরকে) অবকাশ দেয়া হবে না।
৯.
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।
১০.
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِي شِيَعِ الأَوَّلِينَ
তোমার পূর্ববর্তী সম্প্রদায়গুলোর কাছেও আমি রসূল পাঠিয়েছিলাম।
১১.
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلاَّ كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِؤُونَ
ওদের কাছে এমন কোন রসূল আসেননি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করেনি।
১২.
كَذَلِكَ نَسْلُكُهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ
এমনিভাবে আমি এ ধরনের আচরণ পাপীদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেই।
১৩.
لاَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الأَوَّلِينَ
তারা এর প্রতি বিশ্বাস করবে না, পূর্ববর্তীদের এমন রীতি চলে এসেছে।
১৪.
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاء فَظَلُّواْ فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি তাদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে তারা দিনভর আরোহণও করতে থাকে।
১৫.
لَقَالُواْ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
তবুও তারা একথাই বলতো, আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম হচ্ছে বরং আমাদের ওপর যাদু করা হয়েছে।
১৬.
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ
আমি আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং দর্শকদের জন্য তা সুসজ্জিত করে দিয়েছি।
১৭.
وَحَفِظْنَاهَا مِن كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
আর আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে সুরক্ষিত করে দিয়েছি।
১৮.
إِلاَّ مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُّبِينٌ
কিন্তু কেউ চুরি করে শুনতে চাইলে, তার পশ্চাদ্ধাবন করে উজ্জ্বল উল্কাপিন্ড।
১৯.
وَالأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَيْءٍ مَّوْزُونٍ
আর ভু-পৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি।
২০.
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُ بِرَازِقِينَ
আর তাতে তোমাদের জন্যে জীবিকার উপকরন সৃষ্টি করছি এবং তাদের জন্যেও যাদের রিযিকদাতা তোমরা নও।
২১.
وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلاَّ بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ
এমন কোন জিনিস নেই যার ভান্ডার আমার কাছে নেই, কিন্তু আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি।
২২.
وَأَرْسَلْنَا الرِّيَاحَ لَوَاقِحَ فَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَسْقَيْنَاكُمُوهُ وَمَا أَنتُمْ لَهُ بِخَازِنِينَ
আমি বৃষ্টি-সঞ্চারী বায়ু পরিচালনা করি, অতঃপর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, আর তোমাদেরকে তা পান করাই। বস্তুতঃ এ সম্পদের ভাণ্ডার তোমাদের হাতে নেই।।
২৩.
وَإنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ
জীবন ও মৃত্যু আমিই দান করি এবং আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।
২৪.
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ
আমি জানি তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে এবং পরবর্তী আগমনকারীরাও আমার দৃষ্টি সমক্ষে আছে।।
২৫.
وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ إِنَّهُ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
নিশ্চয়ই তোমার পালনকর্তাই তাদেরকে একত্রিত করবেন, তিনি জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাবান।
২৬.
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإِنسَانَ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠনঠনে পচা মাটি থেকে।
২৭.
وَالْجَآنَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ السَّمُومِ
এর পূর্বে জিনদের সৃষ্টি করেছি আগুনের শিখা থেকে।।
২৮.
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
স্মরণ কর যখন তোমার পালনকর্তা ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, আমি শুকনো ঠনঠনে পচা মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করছি।
২৯.
فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُواْ لَهُ سَاجِدِينَ
অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সিজদায় পড়ে যেয়ো।
৩০.
فَسَجَدَ الْمَلآئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ
তখন ফেরেশতারা সবাই সিজদাহ্ করল।
৩১.
إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى أَن يَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
ইবলীস বাদে, সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে অস্বীকৃতি জানাল।
৩২.
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا لَكَ أَلاَّ تَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
আল্লাহ বললেন, হে ইবলিস! তোমার কি হলো যে তুমি সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলে না?
৩৩.
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
ইবলিস বলল, আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সিজদা করব, যাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন শুকনো ঠনঠনে কালচে মাটি থেকে।
৩৪.
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ
আল্লাহ বললেন, তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও, তুমি বিতাড়িত।
৩৫.
وَإِنَّ عَلَيْكَ اللَّعْنَةَ إِلَى يَوْمِ الدِّينِ
আর বিচারদিবস পর্যন্ত তোমার প্রতি অভিসম্পাত।
৩৬.
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
সে বলল, হে আমার পালনকর্তা! আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।
৩৭.
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
আল্লাহ বললেন, তোমাকে অবকাশ দেয়া হল।
৩৮.
إِلَى يَومِ الْوَقْتِ الْمَعْلُومِ
সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।
৩৯.
قَالَ رَبِّ بِمَآ أَغْوَيْتَنِي لأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِي الأَرْضِ وَلأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
সে বলল, হে আমার পলনকর্তা! আপনি যেমন আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করে দেব।
৪০.
إِلاَّ عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
কিন্তু তাদের মধ্য হতে আপনার মনোনীত বান্দাদের ব্যতীত।
৪১.
قَالَ هَذَا صِرَاطٌ عَلَيَّ مُسْتَقِيمٌ
তিনি বললেন, এটা আমার কাছে পৌঁছার সোজা পথ।
৪২.
إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ إِلاَّ مَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْغَاوِينَ
আমার প্রকৃত বান্দাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রান্তদের মধ্য থেকে যারা তোমার পথে চলে।
৪৩.
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِينَ
আর তাদের সবার জন্য নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম।
৪৪.
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِّكُلِّ بَابٍ مِّنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُومٌ
তার সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্যে এক একটি পৃথক দল আছে।
৪৫.
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতে আর নির্ঝরিণীসমূহে।
৪৬.
ادْخُلُوهَا بِسَلاَمٍ آمِنِينَ
তাদেরকে বলা হবে, নিরাপত্তা ও পূর্ণ শান্তি সহকারে তোমরা এতে প্রবেশ কর।
৪৭.
وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ
তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দেব। তারা ভ্রাতৃ-বন্ধনে সামনা-সামনি আসনে বসবে।
৪৮.
لاَ يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُم مِّنْهَا بِمُخْرَجِينَ
সেখানে তাদের মোটেই কষ্ট হবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃতও হবে না।
৪৯.
نَبِّىءْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।
৫০.
وَ أَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الأَلِيمَ
এবং ইহাও যে, আমার শাস্তি বড়ই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
৫১.
وَنَبِّئْهُمْ عَن ضَيْفِ إِبْراَهِيمَ
তুমি তাদেরকে ইব্রাহীমের মেহমানদের অবস্থা শুনিয়ে দাও।
৫২.
إِذْ دَخَلُواْ عَلَيْهِ فَقَالُواْ سَلامًا قَالَ إِنَّا مِنكُمْ وَجِلُونَ
যখন তারা তাঁর গৃহে আগমন করল এবং বলল, আপনার প্রতি সালাম। তখন সে বলল, আমরা তোমাদের ব্যাপারে শংকিত।
৫৩.
قَالُواْ لاَ تَوْجَلْ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلامٍ عَلِيمٍ
তারা বলল, ভয় করবেন না। আমরা আপনাকে একজন জ্ঞানী ছেলে সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি।
৫৪.
قَالَ أَبَشَّرْتُمُونِي عَلَى أَن مَّسَّنِيَ الْكِبَرُ فَبِمَ تُبَشِّرُونَ
সে বলল, তোমরা কি আমাকে এমতাবস্থায় সুসংবাদ দিচ্ছ, যখন আমি বার্ধক্যে পৌঁছে গেছি?
৫৫.
قَالُواْ بَشَّرْنَاكَ بِالْحَقِّ فَلاَ تَكُن مِّنَ الْقَانِطِينَ
তারা বলল, আমরা আপনাকে সত্য সু-সংবাদ দিচ্ছি। অতএব আপনি নিরাশ হবেন না।
৫৬.
قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِ إِلاَّ الضَّآلُّونَ
সে বলল, পথভ্রষ্টরা ছাড়া পালনকর্তার রহমত থেকে কে নিরাশ হয়?
৫৭.
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
সে বলল, হে আল্লাহর প্রেরিতগণ! তোমরা কোন উদ্দেশ্যে আগমন করেছ?
৫৮.
قَالُواْ إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বলল, আমরা এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
৫৯.
إِلاَّ آلَ لُوطٍ إِنَّا لَمُنَجُّوهُمْ أَجْمَعِينَ
তবে লূতের পরিবার-পরিজন বাদে। আমরা অবশ্যই তাদের সবাইকে রক্ষা করব।
৬০.
إِلاَّ امْرَأَتَهُ قَدَّرْنَا إِنَّهَا لَمِنَ الْغَابِرِينَ
তবে তার স্ত্রীকে নয়, আমরা স্থির করেছি যে, সে পেছনে থেকে যাওয়াদের দলভূক্ত হবে।
৬১.
فَلَمَّا جَاء آلَ لُوطٍ الْمُرْسَلُونَ
অতঃপর যখন আল্লাহর প্রেরিতরা লূতের গৃহে পৌঁছল।
৬২.
قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
সে বলল, আপনাদেরকে তো অপরিচিত লোক মনে হচ্ছে।
৬৩.
قَالُواْ بَلْ جِئْنَاكَ بِمَا كَانُواْ فِيهِ يَمْتَرُونَ
তারা বলল, আমরা আপনার কাছে ঐ বস্তু নিয়ে এসেছি, যে সম্পর্কে তারা সন্দেহে পতিত ছিল।
৬৪.
وَأَتَيْنَاكَ بَالْحَقِّ وَإِنَّا لَصَادِقُونَ
আমরা আপনার কাছে সত্য নিয়েই এসেছি এবং আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।
৬৫.
فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ اللَّيْلِ وَاتَّبِعْ أَدْبَارَهُمْ وَلاَ يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ وَامْضُواْ حَيْثُ تُؤْمَرُونَ
অতএব আপনি শেষরাত্রে পরিবারের সকলকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন এবং আপনি তাদের পশ্চাদনুসরণ করবেন না এবং আপনাদের মধ্যে কেউ যেন পিছন ফিরে না দেখে। আপনারা যেখানে আদেশ প্রাপ্ত হচ্ছেন সেখানে যান।
৬৬.
وَقَضَيْنَا إِلَيْهِ ذَلِكَ الأَمْرَ أَنَّ دَابِرَ هَؤُلاء مَقْطُوعٌ مُّصْبِحِينَ
আমি লূতকে এ বিষয় পরিজ্ঞাত করে দেই যে, সকাল হলেই তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করা হবে।
৬৭.
وَجَاء أَهْلُ الْمَدِينَةِ يَسْتَبْشِرُونَ
শহরবাসীরা আনন্দ-উল্লাস করতে করতে (লূতের ঘরে) পৌঁছল।
৬৮.
قَالَ إِنَّ هَؤُلاء ضَيْفِي فَلاَ تَفْضَحُونِ
লূত বলল, তারা আমার মেহমান, অতএব তোমরা আমাকে লাঞ্ছিত করো না।
৬৯.
وَاتَّقُوا اللّهَ وَلاَ تُخْزُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আমাকে লজ্জিত করো না।
৭০.
قَالُوا أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ الْعَالَمِينَ
তারা বলল, দুনিয়াব্যাপী বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমরা কি আপনাকে নিষেধ করিনি?
৭১.
قَالَ هَؤُلاء بَنَاتِي إِن كُنتُمْ فَاعِلِينَ
সে (লূত) বলল, যদি তোমরা কিছু করতেই চাও, তবে আমার (জাতির) কন্যারা আছে।
৭২.
لَعَمْرُكَ إِنَّهُمْ لَفِي سَكْرَتِهِمْ يَعْمَهُونَ
তোমার প্রাণের কসম হে নাবী! তারা উন্মত্ত নেশায় আত্মহারা হয়ে পড়েছিল।
৭৩.
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ
অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তাদেরকে প্রচণ্ড একটি শব্দ আঘাত হানল।
৭৪.
فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ
অতঃপর আমি সেই জনপদকে উল্টে (উপর-নীচ) করে দিলাম এবং তাদের উপর পাকানো মাটির প্রস্থর বর্ষণ করলাম।
৭৫.
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِينَ
নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
৭৬.
وَإِنَّهَا لَبِسَبِيلٍ مُّقيمٍ
এটি (জনপদটি) মানুষের চলাচল পথের পাশেই বিদ্যমান।
৭৭.
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّلْمُؤمِنِينَ
নিশ্চয়ই এতে ঈমানদারদের জন্যে নিদর্শন আছে।
৭৮.
وَإِن كَانَ أَصْحَابُ الأَيْكَةِ لَظَالِمِينَ
আর আয়কাহবাসীরাও অবশ্যই যালিম ছিল।
৭৯.
فَانتَقَمْنَا مِنْهُمْ وَإِنَّهُمَا لَبِإِمَامٍ مُّبِينٍ
অতঃপর আমি তাদের উপর প্রতিশোধ নিয়েছিলাম, এ দুটো জনপদই প্রকাশ্য পথের উপর অবস্থিত।
৮০.
وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَابُ الحِجْرِ الْمُرْسَلِينَ
হিজরের বাসিন্দারাও রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে।
৮১.
وَآتَيْنَاهُمْ آيَاتِنَا فَكَانُواْ عَنْهَا مُعْرِضِينَ
আমি তাদেরকে নিজের নিদর্শনাবলী দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা এগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল।
৮২.
وَكَانُواْ يَنْحِتُونَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا آمِنِينَ
তারা পাহাড়ে নিশ্চিন্তে ঘর খোদাই করত।
৮৩.
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ
অতঃপর এক প্রত্যুষে তাদের উপর এক প্রচন্ড শব্দ এসে আঘাত হানল।
৮৪.
فَمَا أَغْنَى عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
তাদের উপার্জন তখন কোন উপকারে আসল না।
৮৫.
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلاَّ بِالْحَقِّ وَإِنَّ السَّاعَةَ لآتِيَةٌ فَاصْفَحِ الصَّفْحَ الْجَمِيلَ
আমি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী যা আছে তা উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি করিনি। কিয়ামত অবশ্যই আসবে, অতএব পরম উত্তম পন্থায় (ওদেরকে) উপেক্ষা কর।
৮৬.
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْخَلاَّقُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা তিনি সর্বস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
৮৭.
وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنَ الْعَظِيمَ
আমি তোমাকে দিয়েছি বার বার পঠিতব্য সাতটি আয়াত এবং মহা কোরআন।
৮৮.
لاَ تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
তুমি চক্ষু তুলে ঐ বস্তুর প্রতি দেখবে না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি। তাদের জন্যে চিন্তিত হবে না, আর ঈমানদারদের জন্যে স্বীয় বাহু নত কর।
৮৯.
وَقُلْ إِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْمُبِينُ
আর বল, আমি প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র।
৯০.
كَمَا أَنزَلْنَا عَلَى المُقْتَسِمِينَ
যে ধরনের সতর্কীকরণ পাঠানো হয়েছিল (আল্লাহর কিতাবকে) বিভক্তকারীদের (ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদের) উপর।
৯১.
الَّذِينَ جَعَلُوا الْقُرْآنَ عِضِينَ
যারা কোরআনকে খন্ড খন্ড করেছে।
৯২.
فَوَرَبِّكَ لَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ
অতএব তোমার পালনকর্তার কসম! আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
৯৩.
عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
তারা যা করেছে সে সম্পর্কে।
৯৪.
فَاصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
অতএব তুমি প্রকাশ্যে শুনিয়ে দাও যা তোমাকে আদেশ করা হয়েছে এবং মুশরিকদের পরওয়া করো না।
৯৫.
إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِئِينَ
ঠাট্টা-বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য আমিই যথেষ্ট।
৯৬.
الَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ اللّهِ إِلـهًا آخَرَ فَسَوْفَ يَعْمَلُونَ
যারা আল্লাহর সাথে অন্যকেও ইলাহ সাব্যস্ত করে নিয়েছে, অতিসত্তর তারা জানতে পারবে।
৯৭.
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ
আমি জানি, তারা যেসব কথাবার্তা বলে তাতে তোমার মন সংকুচিত হয়।
৯৮.
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
অতএব তুমি তোমার পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষণা কর, আর সিজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও।
৯৯.
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
আর তোমার পালনকর্তার ইবাদত কর, যে পর্যন্ত আপনার কাছে সুনিশ্চিত ক্ষণ (মৃত্যু) না আসে।