Ticker

5/recent/ticker-posts

কুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত

 


আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ এবং আত্মীয়-স্বজনকে দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ এবং অবাধ্যতা করতে বারণ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। -(সূরা নাহল, আয়াত: ৯০)

(১) বিশিষ্ট সাহাবী আ’ব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু এই আয়াত সম্পর্কে বলেছেন, “সুরা নাহলের এই আয়াত হচ্ছে ক্বুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত।”

(২) তাবেয়ী বিদ্বান কাতাদা রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন “যত ভাল স্বভাব রয়েছে সেইগুলি অবলম্বনের নির্দেশ ক্বুরআন দিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে যে সব খারাপ স্বভাব রয়েছে সেইগুলো পরিত্যাগ করতে আল্লাহ তাআ’লা হুকুম করেছেন।”


এই আয়াত নাযিল হওয়া সম্পর্কে তিনটি ঘটনা

(১) হযরত উসমান ইবনু আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) পার্শ্বে বসে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ তিনি তাঁর দৃষ্টি উপরের দিকে উত্তোলন করেন এবং বললেনঃ “আমার নিকট হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করে আমাকে নির্দেশ দেন যে, আমি যেন এই আয়াতটিকে এই সুরার এই স্থানে রেখে দিই (অর্থাৎ সুরা নাহলের ৯০নং আয়াতের স্থানে লিখে রাখি)।”

(২) হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একদা বাড়ীর উঠানে বসে ছিলেন। এমন সময় হযরত উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) তার পার্শ্ব দিয়ে গমন করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে বলেনঃ “বসছে না কেন?” তিনি তখন বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার সাথে কথা বলতে ছিলেন। হঠাৎ তিনি (নবী (সঃ) তাঁর দৃষ্টি আকাশের দিকে উত্তোলন করেন। কিছুক্ষণ ধরে তিনি উপরের দিকেই তাকাতে থাকেন। তারপর ধীরে ধীরে তিনি দৃষ্টি নীচের দিকে নামিয়ে দেন এবং নিজের ডান দিকে যমীনের দিকে তাকাতে থাকেন। এ দিকে তিনি মুখমণ্ডলও ঘুরিয়ে দেন। আর এমনভাবে মাথা হেলাতে থাকেন যে, যেন কারো নিকট থেকে কিছু বুঝতে রয়েছেন এবং কেউ তাঁকে কিছু বলতে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর্যন্ত এই অবস্থাই থাকে। তারপর তিনি স্বীয় দৃষ্টি উঁচু করতে শুরু করেন, এমন কি আকাশ পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টি পৌঁছে যায়। তারপর তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসেন এবং পূর্বের বসার অবস্থায় হযরত উসমানের (রাঃ) দিকে মুখ করেন। হযরত উসমান (রাঃ) সবকিছুই দেখতে ছিলেন। তিনি আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার পাশে বেশ কয়েকবার আমার বসার সুযোগ ঘটেছে। কিন্তু আজকের মত কোন দৃশ্য তো কখনো দেখি নাই?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “কি দেখেছো?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “দেখি যে, আপনি দৃষ্টি আকাশের দিকে উত্তোলন করলেন এবং পরে নীচের দিকে নামিয়ে দিলেন। এরপর ডান দিকে ঘুরে গিয়ে ঐ দিকেই তাকাতে লাগলেন এবং আমাকে ছেড়ে দিলেন। তারপর আপনি মাথাকে এমনভাবে নড়াতে থাকলেন যে, যেন কেউ আপনাকে কিছু বলছে এবং আপনি কান লাগিয়ে তা শুনছেন।” তিনি বললেনঃ “তা হলে তুমি সবকিছুই দেখেছো?” তিনি জবাবে বলেনঃ “জ্বি, হাঁ, আমি সবকিছুই দেখেছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বললেনঃ “আমার কাছে আল্লাহ তাআলার প্রেরিত ফেরে ওয়াহী নিয়ে এসেছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত?” তিনি উত্তর দিলেনঃ “হাঁ, আল্লাহ কর্তৃকই প্রেরিত।” তিনি প্রশ্ন করলেনঃ “তিনি আপনাকে কি বললেনঃ “তিনি জবাব দিলেনঃ “তিনি আমাকে (আরবি) এই আয়াতটি পড়ে শুনালেন।” হযরত উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) বলেনঃ “তৎক্ষণাৎ আমার অন্তরে ঈমান সুদৃঢ় হয়ে যায় এবং রাসূলুল্লাহর (সঃ) মহব্বত আমার অন্তরে স্থান করে নেয়।”

(৩) আবদুল মালিক ইবনু উমাইর (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। যে,হযরত আকসাম ইবনু সাইফীর (রাঃ) নিকট নবীর (সঃ) আবির্ভাবের খবর পোঁছে। তিনি তাঁর কাছে গমন করার স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর কওম তাঁর এই পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তিনি তখন তাদেরকে বলেনঃ “তোমরা আমাকে তাঁর কাছে যেতে না দিলে এমন লোক আমার কাছে হাজির কর যাদেরকে আমি দূত হিসেবে তাঁর নিকট প্রেরণ করবো।” তাঁর কথা অনুযায়ী দু’জন লোক এ কাজের জন্যে প্রস্তুত হয়ে যান। তাঁরা নবীর (সঃ) নিকট হাজির হয়ে আরজ করেনঃ “আমরা আকসাম ইবনু সাইফীর (রাঃ) দূত হিসেবে আপনার নিকট আগমন করেছি।” অতঃপর তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি কে এবং আপনি কি?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “তোমাদের প্রথম প্রশ্নের উত্তর এই যে, আমি মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল্লাহ (সঃ)। আর তোমাদের দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর এই যে, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল।” অতঃপর তিনি (আরবি) এই আয়াতটি পাঠ করেন। তাঁরা বলেনঃ “পুনরায় পাঠ করুন।” তিনি আবার পাঠ করেন। তারা তা মুখস্থ করে নেন এবং ফিরে গিয়ে আকসামকে (রাঃ) সমস্ত খবর অবহিত করেন। তাঁরা তাঁকে বলেনঃ “তিনি নিজের বংশের কোন গৌরব প্রকাশ করেন নাই। শুধু নিজের নাম ও পিতার নাম তিনি বলেন। অথচ তিনি অতি সম্ভান্ত বংশের লোক। তিনি আমাদেরকে যে কথাগুলি শিখিয়ে দিয়েছেন তা আমরা মুখস্থ করে নিয়েছি।” অতঃপর তাঁরা তাঁকে তা শুনিয়ে দেন। কথাগুলি শুনে আকসাম (রাঃ) বলেনঃ “তিনি তো তাহলে খুবই উত্তম ও উন্নত মানের কথা শিখিয়ে থাকেন। আর তিনি খারাপ ও অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত রাখেন। হে আমার কওমের লোকেরা! তোমরা ইসলামে অগ্রগামী হও। তাহলে তোমরা নেতৃত্ব লাভ করবে এবং অন্যদের গোলাম হয়ে থাকবে না।”


আয়াতের তাফসীর ও ব্যাখ্যা

সুরা নাহলের ৯০-নং আয়াতটি এর পূর্বের ৮৯-নং আয়াতের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। আলোচ্য আয়াতের ঠিক পূর্বের আয়াতেই আল্লাহ তাআ'লা বলেছেন,

وَ نَزَّلۡنَا عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ تِبۡیَانًا لِّکُلِّ شَیۡءٍ وَّ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃً وَّ بُشۡرٰی لِلۡمُسۡلِمِیۡنَ

অর্থঃ (হে নবী!) আর আমি আপনার প্রতি এই কিতাব (ক্বুরআনুল কারীম) নাযিল করেছি, যা প্রত্যেকটি বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা, সত্য পথের নির্দেশ), রহমত আর মুসলিম (আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী লোকদের) জন্য সুসংবাদ স্বরূপ।

(১) ইমাম শওকানী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “৮৯-নং আয়াতে আল্লাহ জানিয়েছেন যে, এই ক্বুরআনে সবকিছুর বর্ণনাই স্থান পেয়েছে। সেই কথার সত্যায়ণ স্বরূপ ৯০-নং আয়াতে এমন কিছু বিষয়ের আলোচনা আল্লাহ করছেন, যা সমস্ত বিধি-বিধানের মূল এবং প্রাণ স্বরূপ। তন্মধ্যে প্রথম নির্দেশ হচ্ছে, তিনি আদলের নির্দেশ দিচ্ছেন। মূলতঃ (عدل) শব্দের আসল ও আভিধানিক অর্থ সমান করা। এই অর্থের দিক দিয়েই স্বল্পতা ও বাহুল্যের মাঝামাঝি সমতাকেও (عدل) বলা হয়।

কোন কোন মুফাসসির এই অর্থের সাথে সম্বন্ধ রেখেই আলোচ্য আয়াতে বাইরে ও ভেতরে সমান হওয়া দ্বারা (عدل) শব্দের তাফসীর করেছেন।

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস বলেন, “এই আয়াতে আদলের অর্থ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।”

কারও মতে আদল হচ্ছেঃ ফরয, আবার কারও নিকট আদল হচ্ছেঃ ইনসাফ।

তবে বাস্তব কথা এই যে, (عدل) শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। সবচাইতে উত্তম হচ্ছে আদলের আভিধানিক অর্থই গ্রহণ করা। যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। কেননা কোন কিছুতে বাড়াবাড়ি যেমন খারাপ, তেমনি কোন কিছুতে কমতি করাও খারাপ।

(২) আয়াতের দ্বিতীয় নির্দেশ হচ্ছে, ইহসান করা বস্তুতঃ (الْاِحْسَانِ) -এর আসল আভিধানিক অর্থ সুন্দর করা। যা ওয়াজিব নয়, তার অতিরিক্ত প্রদান করা। যেমন, অতিরিক্ত সাদকা।

ইমাম কুরতুবী রহি'মাহুল্লাহ বলেছেন, "আলোচ্য আয়াতে এই ইহসান শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই উপরোক্ত উভয় প্রকার অর্থই এতে শামিল রয়েছে। প্রসিদ্ধ 'হাদীসে জিবরীল'-এ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহসানের যে অর্থ বর্ণনা করেছেন, তা হচ্ছে ইবাদাতের ইহসান। এর সারমর্ম এই যে, আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করা দরকার, যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছ। যদি এমন স্তর অর্জন করতে তুমি না পার, তাহলে এতটুকু বিশ্বাস তো প্রত্যেক ইবাদতকারীরই থাকা উচিত যে, আল্লাহ তা’আলা আমার কাজ দেখছেন।

(৩) আয়াতের তৃতীয় আদেশ হচ্ছে, আত্মীয়দেরকে দান করা। কি বস্তু দেওয়া, এখানে তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু অন্য এক আয়াতে তা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “আত্মীয়দেরকে তাদের প্রাপ্য দান কর।” সুরা আল-ইসরাঃ ২৬।

বাহ্যতঃ আলোচ্য আয়াতেও তাই বোঝানো হয়েছে; অর্থাৎ আত্মীয়কে তার প্রাপ্য দিতে হবে। অর্থ দিয়ে আর্থিক সেবা করা, দৈহিক সেবা করা, অসুস্থ হলে দেখাশোনা করা, মৌখিক সান্ত্বনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করা ইত্যাদি সবই উপরোক্ত প্রাপ্যের অন্তর্ভুক্ত। মোটকথা, তাদের যা প্রয়োজন তা প্রদান করা।

ইহসান শব্দের মধ্যে আত্মীয়ের প্রাপ্য দেওয়ার কথাও অন্তর্ভুক্ত ছিল; কিন্তু অধিক গুরুত্ব বোঝাবার জন্য একে পৃথক উল্লেখ করা হয়েছে। এ তিনটি ছিল আদেশমূলক নির্দেশ।

(৪) উপরের তিনটি সৎ কাজের মোকাবিলায় আল্লাহ তিনটি অসৎ কাজ করতে নিষেধ করেন। অর্থাৎ আল্লাহ অশ্লীলতা, অসৎকর্ম ও সীমালঙ্ঘন করতে নিষেধ করেছেন।

তন্মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, “ফাহেশাহ”। যার অর্থ অশ্লীলতা-নির্লজ্জতা। কথায় হোক কিংবা কাজে। প্রকাশ্য মন্দকৰ্ম অথবা কথাকে অশ্লীলতা বলা হয়, যাকে প্রত্যেকেই মন্দ মনে করে। সব রকমের অশালীন, কদর্য ও নির্লজ্জ কাজ এর অন্তর্ভুক্ত। এমন প্রত্যেকটি খারাপ কাজ যা স্বভাবতই কুৎসিত, নোংরা, ঘৃণ্য ও লজ্জাকর তাকেই বলা হয় অশ্লীল। যেমন কৃপণতা, ব্যাভিচার, উলঙ্গপনা, সমকামিতা, মুহাররাম আত্মীয়কে বিয়ে করা, চুরি, শরাব পান, ভিক্ষাবৃত্তি, গালাগালি করা, কটু কথা বলা ইত্যাদি। এভাবে সর্বসমক্ষে বেহায়াপনা ও খারাপ কাজ করা এবং খারাপ কাজকে ছড়িয়ে দেয়াও অশ্লীলতা-নির্লজ্জতার অন্তর্ভুক্ত। যেমন মিথ্যা প্রচারণা, মিথ্যা দোষারোপ, গোপন অপরাধ জনসমক্ষে বলে বেড়ানো, অসৎকাজের প্ররোচক গল্প, নাটক ও চলচ্চিত্র, উলংগ চিত্র, মেয়েদের সাজগোজ করে জনসমক্ষে আসা, নারীপুরুষ প্রকাশ্যে মেলামেশা এবং মঞ্চে মেয়েদের নাচগান করা ও তাদের শারীরিক অংগভংগীর প্রদর্শনী করা ইত্যাদি।

(৫) নিষিদ্ধ দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, মুনকার তথা দুস্কৃতি বা অসৎকর্ম। যা এমন কথা অথবা কাজকে বলা হয় যা শরীআত হারাম করেছেন। যাবতীয় গোনাহই এর অন্তর্ভুক্ত। কারও কারও মতে এর অর্থ শির্ক।

(৬) নিষিদ্ধ তৃতীয় জিনিসটি হচ্ছে, (بغي) শব্দের আসল অর্থ সীমালঙ্ঘন করা। ফাতহুল কাদীর।

কারও কারও মতে, যুলুম। কারও কারও মতে, হিংসা-দ্বেষ। মোটকথা, এর দ্বারা যুলুম ও উৎপীড়ন বোঝানো হয়েছে। নিজের সীমা অতিক্রম করা এবং অন্যের অধিকার লংঘন করা ও তার ওপর হস্তক্ষেপ করা। তা আল্লাহর হক হোক বা বান্দার হক। মুনকার শব্দের যে অর্থ বর্ণিত হয়েছে, তাতে (بغي) ও (فَحْشَاءِ) ও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু চূড়ান্ত মন্দ হওয়ার কারণে فَحْشَاءِ কে পৃথক ও আগে উল্লেখ করা হয়েছে।


উৎস এবং কৃতজ্ঞতা:

(১) তাফসীর ইবনে কাসীর,

(২) ফাতহুল ক্বাদীর,

(৩) শায়খ আবু বকর জাকারিয়া,

(৪) তাফসীর আহসানুল বায়ান,

(৫) ক্বুরআন মাজিদ android app.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ