Ticker

5/recent/ticker-posts

বিনয় ও নম্রতার গুরুত্ব ও ফযিলত



(১) উম্মুল মুমিনিন আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহা বলেছেন, “তোমরা সবচাইতে বড় ইবাদত ‘বিনয় ও নম্রতার’ ব্যাপারে অবহেলা করছো।” (আয-যুহদঃ ১/১৩২)

অনেকের কাছে “সবচাইতে বড় ইবাদত” বিনীত ও নম্র হওয়ার কথা শুনে আশ্চর্য হতে পারেন। আপনারা আশ্চর্য না হয়ে মহান আল্লাহর এই আয়াত পড়ুন,

وَ عِبَادُ الرَّحۡمٰنِ الَّذِیۡنَ یَمۡشُوۡنَ عَلَی الۡاَرۡضِ ہَوۡنًا وَّ اِذَا خَاطَبَہُمُ الۡجٰہِلُوۡنَ قَالُوۡا سَلٰمًا

“আর রহ’মানের বান্দা তারাই যারা যমীনে নম্রভাবে চলাফেরা করে আর অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে সম্বোধন করলে তারা বলে- ‘শান্তি’, (আমরা বিতর্কে লিপ্ত হতে চাই না)।” (সুরা আল-ফুরক্বান: ৬৩)

সুরা আল-ফুরক্বানে মহান আল্লাহ যখন ‘ইবাদুর রহমান’ বা দয়াময় আল্লাহর বান্দাদের পরিচয় তুলে ধরেছেন, সবার প্রথমে তিনি তাদের বিনয় এবং নম্রতা গুণের কথা উল্লেখ করেছেন, সুবহা’নাল্লাহ! এ থেকে বিনয় এবং নম্রতার গুরুত্ব বুঝা যায়।

আয়াতের তাফসীরঃ

আর দয়াময় আল্লাহর বান্দা তো তারাই; যারা স্থিরতা, গাম্ভীর্য এবং বিনয়ের সহিত চলাফেরা করে। তারা যমীনে গর্বভরে চলে না, অহংকারীর ন্যায় পা ফেলে না। আর অজ্ঞ লোকেরা যখন মূর্খতাপূর্ণ কথাবার্তা বলে ও কাজ করে (যদিও বাস্তবে তারা বিদ্বান হয়) তাহলে তারা ‘সালাম’ (তোমার উপর শান্তি) এই কথা বলে। অর্থাৎ মূর্খদের বাজে কথার জবাবে তারা নিরাপত্তামূলক কথা বলে, যাতে করে অন্যরা কষ্ট না পায় এবং কোন বিশৃংখলা না হয়, সেই জন্য তাদের থেকে পাশ কাটিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে চলে। (তাফসীর ফাতহুল মাজীদ)।

(২) আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার কাছে ওয়াহী করেছেন, তোমরা বিনীত হও; যাতে করে তোমরা একজন অন্যজনের উপর যুলুম না করো।” সিলসিলা আস-সহীহাহঃ ৫৭০।

(৩) আলী ইবনে আবি তালিব রদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেছেন, “তোমার অধিক ধন-সম্পদ বা সন্তান হওয়ার মাঝে কল্যাণ নয়। বরং তোমার জন্য প্রকৃত কল্যাণ হচ্ছে তোমার ইলম, ধৈর্য্য এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পাবে, তুমি ইবাদতের ব্যাপারে রিয়া থেকে মুক্ত থাকবে। যদি তুমি নেক আমল করো তাহলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করো, আর যদি তুমি খারাপ কাজ করে ফেলো তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।” হিলইয়াতুল আওলিয়াঃ ১/৭৫।

(৪) ইবরাহীম ইবনে শায়বান (মৃত্যুঃ ৩৩৭ হিজরী) রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “সম্মান হচ্ছে নিজেকে বিনীত এবং নম্র করা, মহত্ত্ব হচ্ছে তাক্বওয়া আর স্বাধীনতা হচ্ছে তোমার যা আছে তা-ই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা।” মাদারিজ আস-সালিকীন।

(৫) হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “তুমি কি নিজেকে নম্র ও বিনীত করার অর্থ জানো? বিনীত হওয়ার অর্থ হচ্ছে, যখন তুমি ঘর থেকে হবে, যখনই কোন মুসলমান তোমার সামনে আসবে তুমি মনে করবে যে, সে তোমার চাইতে উত্তম।” আত-তাউদু ওয়াল খুমুল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ