Ticker

5/recent/ticker-posts

আমরা তাঁরই ইবাদাত করি এবং তাঁরই নিকট সাহায্য কামনা করি


إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ


'আমরা আপনারই ইবাদাত করছি এবং আপনারই নিকট সাহায্য চাচ্ছি' -(সূরা ফাতিহা, আয়াত- ৫)


এ সম্পর্কিত আরও বহু আয়াত কুরআনুল কারীমে বর্ণিত রয়েছে। যেমন-
'তাঁরই ইবাদাত কর এবং তাঁরই উপর নির্ভর করো এবং (জেনে রেখো যে) তোমরা যা করছো তা হতে তোমাদের প্রভু উদাসীন নয়'। -(১১: ১২)

অন্য আরেক জায়গায় বলেন-
'পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভু তিনিই, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই । সুতরাং তাঁকেই একমাত্র কার্যসম্পাদনকারীরূপে গ্রহণ করো'। -(৭০:৯)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেছেন যে, 'ঈয়্যাকা'নাবুদু' এর অর্থ হচ্ছে- 'হে আমার প্রভু! আমরা বিশেষভাবে একত্ববাদে বিশ্বাসী, আমরা ভয় করি এবং মহান সত্তায় সবসময় আশা রাখি । আপনি ছাড়া আর কারও আমরা ইবাদাত করি না, কাউকে ভয়ও করি না এবং কারও উপর আশাও রাখি না'। 'ওয়া ঈয়্যাকা'নাশতায়ি-ন' এর তাৎপর্য ও ভাবার্থ হচ্ছে- 'আমরা আপনার পূর্ণ আনুগত্য বরণ করি ও আমাদের সকল কার্যে একমাত্র আপনারই কাছে সহায়তা প্রার্থনা করি'।


কাতাদাহ (রঃ) বলেন, এর ভাবার্থ হচ্ছে এই যে, মহান আল্লাহ্ নির্দেশ দিয়েছে একমাত্র তাঁরই উপাসনা করতে এবং আমাদের সকল কার্যে একমাত্র তাঁরই নিকট সাহায্য প্রাথনা করতে। 'ঈয়্যাকা'নাবুদু' কে পূর্বে আনার কারণে এই যে, ইবাদাত হচ্ছে মূল বিষয়, আর সাহায্য চাওয়া ইবাদাতেরই মাধ্যম ও ব্যবস্থা। আর সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, বেশী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে পূর্বে বর্ণনা করা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে পরে বর্ণনা করা । আল্লাহ্ তা'আলা এসব ব্যাপারে ভালো জানেন।

এ আয়াতে এ বিষয়েও চিন্তা করা কর্তব্য যে, 'আমরা তোমারই নিকট সাহায্য চাই' কিন্তু কোন কাজের সাহায্য চাই, তার কোন উল্লেখ নেই। জমহুর মুফাসসিরগণের অভিমত এই যে, নির্দিষ্ট কোন ব্যাপারে সাহায্যের কথা উল্লেখ না করে 'আম বা সাধারণ' (সকল প্রকারের) সাহায্যের কথা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আমি আমার ইবাদাত এবং প্রত্যেকধর্মীয় ও পার্থিব কাজে এবং অন্তরে পোষিত প্রতিটি আশা-আকাঙ্ক্ষায় কেবল তোমারই (আল্লাহরই) সাহায্য প্রার্থনা করি। [মা'আরিফুল কুরআন]

এই আয়াতের ভাবার্থ এমনটা যে- 'আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক কেবল ইবাদাতের নয় বরং আমাদের সাহায্য প্রার্থনার সম্পর্কও একমাত্র আল্লাহরই সাথে রয়েছে। আমরা জানি আল্লাহই সমগ্র বিশ্ব-জাহানের রব। সমস্ত শক্তি আল্লাহরই হাতে কেন্দ্রীভূত। তিনি একাই যাবতীয় নিয়ামত ও অনুগ্রহের অধিকারী। তাই আমাদের অভাব ও প্রয়োজন পূরণের জন্য আমরা একমাত্র আল্লাহরই দুয়ারে ধর্ণা দেই। আল্লাহরই সামনে নিজেদের সুপর্দ করে দেই এবং তাঁরই সাহায্যের ওপর নির্ভর করি।' [তাফহীমুল কুরআন]


তথ্যসূত্র:

  • তাফসীর ইবনে কাছীর
  • মা'আরিফুল কুরআন
  • তাফহীমুল কুরআন


প্রাসঙ্গিক লিখা

  1. যিনি প্রতিফল দিবসের মালিক
  2. যিনি পরম দয়ালু ও অতিশয় করুণাময়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ