Ticker

5/recent/ticker-posts

যিকির এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য


 আল্লাহ তাআ’লা অধিক পরিমাণে তাঁর যিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন

(১) আল্লাহ তাআ’লা ক্বুরআনে আমাদেরকে অধিক পরিমাণে তাঁর যিকির করার আদেশ দিয়ে বলেনঃ

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ ذِكۡرٗا كَثِيرٗا ٤١

وَسَبِّحُوهُ بُكۡرَةٗ وَأَصِيلًا ٤٢

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। আর সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।” সুরা আল-আহজাবঃ ৪১-৪২।


(২) মহান আল্লাহ সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁর যিকির করার আদেশ দিয়ে বলেন,

وَاذْكُرْ رَّبَّكَ فِيْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَّخِيْفَةً وَّدُوْنَ الْجَــهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْاٰصَالِ وَلَا تَكُنْ مِّنَ الْغٰفِلِيْنَ

“আর আপনি আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন মনে মনে, বিনয় ও ভীতি সহকারে, অনুচ্চস্বরে; সকালে এবং সন্ধ্যায়। আর আপনি গাফিল (উদাসীন লোকদের) অন্তর্ভুক্ত হবেন না।” সুরা আল-আ’রাফঃ ২০৫।


(৩) দিনের বিভিন্ন সময়ে আল্লাহকে স্মরণ করার আদেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,

فَسُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ حِينَ تُمۡسُونَ وَحِينَ تُصۡبِحُونَ ١٧

وَلَهُ ٱلۡحَمۡدُ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَعَشِيّٗا وَحِينَ تُظۡهِرُونَ ١٨

“সুতরাং তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও আর সকালে, এবং অপরাহ্নে ও যুহরের সময়ে; আর আসমানসমূহে ও যমীনে প্রশংসা তো একমাত্র তাঁরই।” সুরা আর-রুমঃ ১৭-১৮।


(৪) নামায আদায় করার পর যেমন আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান (ব্যবসা, চাকুরী বা অন্যান্য জীবিকা অর্জন) করতে হবে, এর সাথে সাথে আল্লাহ তাআ’লা আমাদেরকে অধিক পরিমাণে তাঁর যিকির করার আদেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহর বাণীঃ

فَإِذَا قُضِيَتِ ٱلصَّلَوٰةُ فَٱنتَشِرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِ ٱللَّهِ وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَثِيرٗا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ

“অতঃপর যখন নামায সমাপ্ত হবে তখন তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড়, আর আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাক; যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার।” সুরা জুমুআ’হঃ ১০।


(৫) হজ্জের ‘মানাসিক বা হুকুম-আহকাম আদায়ের পর আল্লাহ তাআ’লা অধিক পরিমাণে তাঁর যিকির করার আদেশ দিয়ে বলেন,

فَإِذَا قَضَيۡتُم مَّنَٰسِكَكُمۡ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَذِكۡرِكُمۡ ءَابَآءَكُمۡ أَوۡ أَشَدَّ ذِكۡرٗاۗ

“অতঃপর যখন তোমরা তোমাদের ‘মানাসিক’ (হজ্জের মধ্যে করণীয় কার্যাবলী) সম্পন্ন করে ফেলবে, তখন আল্লাহর যিকিরে (স্মরণে) মশগুল হও, যেমনিভাবে তোমরা নিজেদের বাপ-দাদাদের স্মরণে মশগুল থাক, বরং তার চাইতেও বেশি (আল্লাহকে) স্মরণ কর।” সুরা আল-বাক্বারাহঃ ২০০।


(৬) জিহাদে শত্রু বাহিনীর সম্মুখীন হওয়ার সময়ও আল্লাহ তাআ’লা অধিক পরিমাণে তাঁর যিকির করার আদেশ দিয়ে বলেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا لَقِيتُمۡ فِئَةٗفَٱثۡبُتُواْ وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَثِيرٗا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٤٥

“হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা কোন বাহিনীর সম্মুখীন হবে তখন (শত্রুর বিরুদ্ধে) অবিচল থাকবে আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করবে, যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার।” সুরা আনফালঃ ৪৫।


(৭) যারা দিনে ও রাতে, দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়, বসা অবস্থায় কিংবা শায়িত অবস্থায় অর্থাৎ, সর্বদাই আল্লাহর যিকির করে এবং ক্বুরআনের আয়াত নিয়ে, আল্লাহর সৃষ্টি জগত নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে তাদেরকে ‘উলিল আলবাব’ (বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ব্যক্তি) আখ্যায়িত করে মহান আল্লাহ তাদের প্রশংসা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿۱۹۰﴾ۚۙ

الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰہَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِہِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ ہٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۱۹۱﴾

“নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে ‘উলিল আলবাব’ (বুদ্ধিমান, জ্ঞানী) ব্যক্তিদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে। যারা আল্লাহকে দাঁড়ানো অবস্থায়, বসা অবস্থায় এবং শায়িত অবস্থায় স্মরণ করে আর আসমান ও যমীন সৃষ্টির ব্যাপারে চিন্তা করে (তারা বলে), ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এইসব অনর্থক সৃষ্টি করনি, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি! সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা কর। সুরা আলে ইমরানঃ ১৯০-১৯১।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ