"আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়।" -(সূরা বাকারাহ, আয়াত: ৮)
এই আয়াতটিতে মুনাফিদের আসল চেহারা বুঝানো হয়েছে। যা নিম্নে আরো স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হচ্ছে-
'নিফাক' এর অর্থ হচ্ছে ভালোর প্রকাশ ও মন্দ গোপন করা। নিফাক দুই প্রকার: (১) বিশ্বাস জনিত ও (২) কার্য জনিত।
প্রথম প্রকারের মুনাফিক তো চির জাহান্নামী এবং দ্বিতীয় প্রকারের মুনাফিক জঘন্যতম পাপী।
মহান আল্লাহ তা'আলা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা গিয়ে বলেন, 'মুনাফিকরা আপনার নিকটে এসে বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি আল্লাহর রাসূল....'। কিন্তু এর জবাবে আল্লাহ তা'আলা বলেন: 'আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী'।
ইমাম ইবনে জারীর (রহ:) বলেন যে, মুনাফিকের কথা তার কাজের উল্টো, তার গোপনীয়তা তার প্রকাশের বিপরীত হয়ে থাকে।
হযরত কাতাদাহ (রহ:) বলেন, মুনাফিদের অবস্থা এই যে: তাদের বিশ্বাস পৃথক, মুখ পৃথক, কাজ পৃথক, তারা মাঝিহীন নৌকার মতো যা বাতাসে কখনো এদিক ঘুরে আবার কখনো ওদিক ঘুরে।
মুনাফিকরা ঈমানকে প্রকাশ করে ও কুফরীকে গোপন রেখে নিজেদের বোকামী দ্বারা আল্লাহকে ধোকা দিচ্ছে এবং মনে করছে যে তাদের প্রতারণার জালে কতক মুমিন আটকে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এই ধোকা তারা নিজেদেরকেই দিচ্ছে, যদিও তারা প্রকৃত সত্য বুঝে উঠছে না। যেমনটি আল্লাহ তা'আলা বলেন: 'তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না এবং তারা তা অনুভব করতে পারে না।' (সূরা বাকারাহ: ৯)
প্রকৃতপক্ষে এই প্রবঞ্চনার সমস্ত প্রকার ক্ষতির শিকার তারা নিজেরাই হয়েছে। যার ফলে তারা তাদের আখিরাতকে নষ্ট করেছে এবং দুনিয়াতেও লাঞ্ছিত হয়েছে।
তথ্যসূূত্র:
- তাফসীর ইবনে কাছীর
- তাফসীর আহসানুুল বায়ান
0 মন্তব্যসমূহ