"এরাই তাদের প্রভুর পক্ষ হতে প্রাপ্ত হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, এরাই পূর্ণ সফলকাম" --[সূরা বাকারাহ, আয়াত: ৫]
এই আয়তে ঐসব লোকের কথা বলা হয়েছে যাদের গুণাবলী পূর্বের আয়াতসমূহে বর্ণিত হয়েছে, যেমন অদৃশ্যের উপর ঈমান আনা, সালাত কায়েম করা, আল্লাহর দেয়া বস্তু হতে দান করা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনা, তাঁর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস রাখা এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রেখে ভালো কাজ করা এবং মন্দ ও হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা। এসব লোকই হিদায়াত প্রাপ্ত। আর এসব লোকের জন্যই ইহকাল ও পরকালে সফলতা রয়েছে।
একবার কোন এক সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে প্রশ্ন করলেন: হে আল্লাহর রাসূল (সা:)! পবিত্র কুরআনের কতগুলো আয়াত তো আমাদেরকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের মনে অনন্ত আশার সঞ্চার করে কিন্তু কতকগুলো আয়াত আবার আমাদের আশা ভরসাকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে এবং নৈরাশ্যের সাগরে নিক্ষেপ করছে। রাসূলুল্লাহ (সা:) তখন বললেন, এসো আমি তোমাদেরকে জান্নাতী ও জাহান্নামীদের পরিচয় পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেই। অতঃপর তিনি 'আলিফ- লাম- মীম' হতে 'মুফলিহুন' (সূরা বাকারার ১ থেকে ৫ নং আয়াত পর্যন্ত) পাঠ করে বললেন: এরা তো জান্নাতী। সাহাবীগণ (রা:) খুশি হয়ে বললেন: আলহামদুলিল্লাহ! আমাদের আশা আছে যে, আমরা তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা:) সূরা বাকারার ৬ ও ৭ নং আয়াত পাঠ করলেন এবং বললেন: এরা জাহান্নামী। সাহাবীগণ (রা:) বললেন: আমরা এরূপ নই। রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন: হ্যাঁ। -[মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিম]
এখানে সেই ঈমানদার বা বিশ্বাসীদের পরিণামের কথা বলা হয়েছে, যারা ঈমান আনার পর আল্লাহভীরু ও আমল করা সহ সঠিক আক্বিদার উপর কায়িম থাকার প্রতি যত্ন নেয়; কেবল মৌখিক ঈমান আনাকে যথেষ্ট মনে করে না। আর সফলকাম হওয়ার অর্থ আল্লাহর সন্তুষ্টি, তাঁর রহমত ও ক্ষমা লাভ। -[তাফসীর আহসানুল বায়ান]
তথ্যসূত্র:
- তাফসীর ইবনে কাসীর
- তাফসীর আহসানুল বায়ান
0 মন্তব্যসমূহ