হযরত মা'কাল বিন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: 'সূরা বাকারাহ' কুরআনের কূঁজ এবং তার চূড়া। এর এক একটি আয়াতের সঙ্গে ৮০ জন ফেরেশতা উর্ধ্বগগণ থেকে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বিশেষ করে 'আয়াতুল কুরসী' তো খাস আরশ হতে অবতীর্ণ হয়েছে এবং এই সূরার সঙ্গে মিলানো হয়েছে।
অপর এক হাদীসে এসেছে, তোমরা নিজেদের ঘরকে কবরে পরিণত করো না, যে ঘরে সূরা বাকারাহ্ পাঠ করা হয়, তথায় শয়তান প্রবেশ করতে পারে না। ইমাম তিরমিযী রহিমাহুল্লাহ একে হাসান বলেছেন।
অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, যে ঘরে সূরা বাকারাহ্ পাঠ করা হয়, সেখান থেকে শয়তান পালায়ন করে।
জামে তিরমিযী, সুনানে নাসাঈ এবং সুনানে ইবনে মাজায় রয়েছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি ছোট্ট সেনাবাহিনীকে এক জায়গায় পাঠালেন এবং তিনি তার নেতৃত্বভার এমন ব্যক্তির উপর অর্পণ করলেন, যিনি বলেছিলেন: আমার সূরা বাকারাহ্ মুখস্ত আছে।
সহীহ বুখারী শরীফে রয়েছে যে, হযরত উসাইদ বিন হুজাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু একদা রাত্রে সূরা বাকারাহ্ পাঠ আরম্ভ করেন। তাঁর ঘোড়াটি, যা তাঁর পার্শ্বেই বাঁধা ছিলো, হঠাৎ করে লাফাতে শুরু করে। তিনি পাঠ বন্ধ করলে ঘোড়া সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আবার তিনি পড়তে আরম্ভ করেন এবং ঘোড়াও লাফাতে শুরু করে। তিনি পুনরায় পড়া বন্ধ করেন এবং ঘোড়াটিও স্তব্ধ হয়ে থেমে যায়। তৃতীয়বারও এরূপই ঘটে। তাঁর শিশু পুত্র ইয়াহইয়া ঘোড়ার পার্শ্বেই শুয়ে ছিলো। কাজেই তিনি পড়া বন্ধ করে ছেলেকে নেন। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করেন যে, ঘোড়ার চমকে উঠার কারণ কি? সকালে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট হাজির হয়ে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুনতে থাকেন ও বলতে থাকেন, "উসাইদ! তুমি পড়েই যেতে!" উসাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: হে আল্লাহর রাসূল! তৃতীয়বার পরে প্রিয় পুত্র ইয়াহইয়ার কারণে আমি পড়া অসম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। অতঃপর আমি মাথা আকাশের দিকে উঠালে একটি জ্যোতির্ময় জিনিস দেখতে পাই এবং দেখতে দেখতেই তা উপরের দিকে উঠে গিয়ে শূন্যমার্গে মিলিয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: তুমি কি জানো সেটা কি ছিলো? তাঁরা ছিলেন, গগণবিহারী অগণিত জ্যোতির্ময় ফেরেশতা। তোমার (পড়ার) শব্দ শুনে তাঁরা নিকটে এসেছিলেন। যদি তুমি পাঠ বন্ধ না করতে, তবে তাঁরা সকাল পর্যন্ত এরকমই থাকতেন এবং মদীনার সকলে তা দেখে চক্ষু জুড়াতেন। একটি ফেরেশতাও তাদের দৃষ্টির অন্তরাল হতেন না।
নাযিল হওয়ার দিক দিয়ে এটি প্রথম পর্যায়ের মাদানী সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত। তবে এর কতকগুলো আয়াত বিদায়ী হজ্জ্বের সময়ে নাযিল হয়েছে। কোন কোন আলেমের মতে এর মধ্যে রয়েছে এক হাজার বার্তা, এক হাজার বিধি-বিধান এবং এক হাজার বাধা নিষেধ।
নাযিল হওয়ার দিক দিয়ে এটি প্রথম পর্যায়ের মাদানী সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত। তবে এর কতকগুলো আয়াত বিদায়ী হজ্জ্বের সময়ে নাযিল হয়েছে। কোন কোন আলেমের মতে এর মধ্যে রয়েছে এক হাজার বার্তা, এক হাজার বিধি-বিধান এবং এক হাজার বাধা নিষেধ।
তথ্যসূত্র:
- তাফসীর ইবনে কাছীর
- তাফহীমুল কুরআন
- তাফসীর আহসানুল বায়ান
1 মন্তব্যসমূহ
জাযাকাল্লাহ খাইরান
উত্তরমুছুন