Ticker

5/recent/ticker-posts

কুরআনের মু'জিযা

মানুষ মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে প্রকৃতগতভাবেই অপছন্দ করে, যতক্ষণ না সে বিপরীত পক্ষের দৈহিক শক্তি কিংবা আধ্যাত্মিক শক্তির কারণে তা করতে বাধ্য হয়। অথবা যদি তাকে এমন কোন অলৌকিক কৃতিত্বপূর্ণ কিছু দেখানো হয় যা মানুষের সামর্থের অনেক বাইরে। প্রথম দু'টির ক্ষেত্রে সে অনিচ্ছা সহকারে আত্মসমর্পণ করে, কিন্তু তৃতীয়টির ক্ষেত্রে তার আত্মসমর্পণের কারণ হলো মানবীয় ক্ষমতার তুলনায় একটি উচ্চতর অতিপ্রাকৃতিক শক্তি বা ক্ষমতার উপর তার বিশ্বাস।

যেহেতু নবী মুহাম্মদ (সা:) ছিলেন সর্বশেষ নবী; তিনি জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছেন; তাই তাঁকে এমন এক মু'যিজা দান করা হয়েছে যা কেবল তাঁর সমসাময়িক জনগোষ্ঠীকেই অভিভূত করেনি, বরং তা পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত গোটা মানবজাতিকে অভিভূত করবে এবং তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবে।

আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সর্বশেষ নবীর নিকট এমনই একটি কিতাব অবতীর্ণ করলেন যার কিছু সূরা 'আলিফ-লাম-মীম', 'ক্বাফ' কিংবা 'নূন' এর মতো আদ্যক্ষর দিয়ে অবোধগম্য ভঙ্গিতে শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে তৎকালীন আরবের ভাষাগত পাণ্ডিত্যকে এই মর্মে উপহাস করা হয়েছে যে, এ গ্রন্থ তোমাদের সাহিত্য-নৈপুণ্যের নাগালের উর্ধে।

কুরআনের সবচেয়ে ছোট্ট সূরাটি মাত্র ছোট্ট তিনটি আয়াতের সমষ্টি; তারপরও তোমরা যতই চেষ্টা করো এর সমমানের কিছুই রচনা করতে পারবে না। অতএব, সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (সা:) এর একমাত্র স্থায়ী ও চিরন্তন মু'যিজা হল মহাগ্রন্থ আল কুরআন। এ প্রসঙ্গে নবী (সা:) বলেছেন,
'সকল নবীকেই এমন কিছু দেয়া হয়েছে যার কারণে লোকেরা তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আমাকে যা দেয়া হয়েছে তা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত ওহী (কুরআন); তাই আমি আশা করি, কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে বেশি অনুসারী হবে আমার।' -[সহীহুল বুখারী, খণ্ড ৬, হা ৫০৪; মুসলিম, খণ্ড ১, হা ২৮৩]
কোন গ্রন্থকে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হতে হলে তাকে অবশ্যই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের বাস্তবতা বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ নির্ভুল হতে হবে। আর এসব বিষয় যাচাই করে দেখলে এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়ে যায় যে, কুরআন অনাদি অনন্ত মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকেই নাযিলকৃত গ্রন্থ।



 প্রাসঙ্গিক বিষয়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ