কুরআন কেবল তার উৎস ও বিশুদ্ধতার দিক দিয়েই অনন্য নয়, বরং বিষয়বস্তু উপস্থাপনার ক্ষেত্রেও সকল গ্রন্থের মধ্যে এটি অদ্বিতীয়। কুরআনের অল্প কয়েকটি আয়াতের উপর ক্ষণিক দৃষ্টিপাত করলেও স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এতে বিচিত্র প্রকৃতির সাহিত্যশৈলীর সমাবেশ রয়েছে।
কুরআনের একেবারে প্রথম আয়াতটি থেকে নিয়ে সর্বশেষ আয়াত পর্যন্ত প্রত্যেকটি সূরা ও আয়াতে যে উদ্দেশ্যগুলো বিদ্যমান; তা হল-
- আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ক,
- মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক এবং
- পারিপার্শ্বিক পৃথিবীর সাথে মানুষের সম্পর্ক।
এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে রকমারি সাহিত্যিক বৈচিত্র্যের মাধ্যমে কুরআনের মূল বার্তাকে সর্বাধিক কার্যকর পদ্ধতিতে পেশ করা হয়েছে। একই দিকে আহ্বানের পুনরাবৃত্তি যেন পাঠকের মধ্যে একঘেয়েমী না আসে এবং আপাতদৃশ্য পুনরাবৃত্তি যেন বিরক্তির সৃষ্টি না করে বরং পাঠকের নিকট হৃদয়াগ্রাহী করে বার্তাটি পৌঁছে দেয়, সে লক্ষ্যে বিচিত্র সাহিত্যিক ঢং ব্যবহার করা হয়েছে। এসব রচনাশৈলীর অনেকগুলোই আরবি ভাষা ও তার গঠনপ্রকৃতির জন্য অনন্য; কিছু কিছু আবার অত্যন্ত জটিল- যা কেবল সাহিত্যবিশারদ ও ভাষাতাত্ত্বিকরাই মূল্যায়ন করতে পারেন।
কুরআনুল কারীমে যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক শৈলী সর্বত্র ব্যবহৃত হয়েছে; তা হলো-
- মাসাল - উপমা, প্রবাদ ও রূপকালঙ্কার,
- কসম - শপথ,
- জাদাল - বিতর্ক, ও
- কিসসাহ্ - গল্প।
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন-
'এ কুরআনের মধ্যে আমি মানুষের জন্য নানা রকমের উপমা পেশ করেছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।' -[সূরা আয যুমার, আয়াত: ২৭]
0 মন্তব্যসমূহ