Ticker

5/recent/ticker-posts

কুরআন স্পর্শ করে কসম খাওয়া যায় কি?

কুরআন হল আল্লাহর কালাম। আর আল্লাহর কালাম হল তার সিফাত (গুন)। আর তার সিফাতের শপথ করা যায়। যেমন তার ইজ্জত, আজমত, কুদরত, কবরীয়া, জালাল ইত্যাদির কসম খাওয়া যায় এবং তার অসিলায় দুয়া ও আশ্রয় প্রার্থনা করা যায়।

নবী (সঃ) বলেছেন, “একদা আইয়ুব (আঃ) উলঙ্গ হয়ে গোসল করছিলেন। অতঃপর তার উপর সোনার পঙ্গপাল পড়তে লাগল। আইয়ুব (আঃ) তা আঁজলা ভরে ভরে বস্ত্রে রাখতে আরম্ভ করলেন। সুতরাং তার প্রতিপালক আযযা অজাল্ল তাকে ডাক দিলেন, ‘ হে আইয়ুব! তুমি যা দেখছ, তা হতে কি আমি তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দেইনি?’ তিনি বললেন, ‘অবশ্যই, তোমার ইজ্জতের কসম! কিন্তু আমি আমার বরকত হতে অমুখাপেক্ষী নই।’ (বুখারি)

মহানবী (সঃ) বললেন, “জাহান্নাম ‘আরও আছে কি’ বলতেই থাকবে। পরিশেষে রাব্বুল ইজ্জত তাবারাকা তায়ালা তাতে নিজ পায়ের পাতা (পা) রেখে দেবেন। তখন সে বলবে, ‘যথেষ্ট, যথেষ্ট, তোমার ইজ্জতের কসম!’ আর তার পরস্পর অংশগুলো সংকীর্ণ হয়ে যাবে।” (বুখারি ৭৩৮৪, মুসলিম ২৮২৮ নং, আবু আওয়ানাহ )

রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “ কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য হতে এমন এক ব্যক্তি কে নিয়ে আসা হবে, যে দুনিয়ায় সবচেয়ে সুখী ও বিলাসী ছিল। অতঃপর তাকে জাহান্নামে একবার (মাত্র) চুবানো হবে, তারপর তাকে বলে হবে, ‘হে আদম সন্তান! তুমি কি কখন ভাল জিনিস দেখেছ? তোমার নিকটে কি কখন সুখ সামগ্রী এসেছে?’ সে বলবে, ‘না। তোমার ইজ্জতের কসম ! হে প্রভু।’ আর জান্নাতিদের মধ্য থেকে এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, যে দুনিয়ায় সবচেয়ে দুঃখী ও অভাবী ছিল। তাকে জানাতে (মাত্র) একবার চুবানোর পর বলা হবে, ‘হে আদম সন্তান! তুমি কি (দুনিয়াতে) কখনো দুঃখ কষ্ট দেখেছ? তোমার উপরে কি কখনো বিপদ গেছে?’ সে বলবে, ‘না। তোমার ইজ্জতের কসম! আমার উপর কোনদিন কষ্ট আসে নি এবং আমি কখনো কন বিপদও দেখিনি।’ (আহমাদ ১৩৬৬০ নং, বাইহাকি ১০/৪১)


নবী (সঃ) এই বলে দুয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন,

“আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বানীর অসিলায় তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার মন্দ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” 
“আমি আল্লাহর মর্যাদা ও কুদরতের অসিলায় সেই জিনিসের অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাচ্ছি, যা আমি পাচ্ছি ও ভয় করছি।”

কসম ভঙ্গের কাফফারা:

দশজন মিসকিনের মধ্যম ধরনের খাবার তৈরি করে দিনে অথবা রাত্রে তাদেরকে ডেকে খাইয়ে দিন। অথবা তাদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিন। অথবা মাথাপিছু সওয়া এক কিলো (১.২৫ কেজি) করে (সর্বমোট ১২.৫ কেজি) চাল তাদের মাঝে বণ্টন করে দিন। দশজন মিসকিন না পাওয়া গেলে পাঁচ জন মিসকিনকে দু'বেলা খাওয়ান অথবা আড়াই কিলো করে চাল দিয়ে দিন। কাপড় দিলে মহিলাকে মধ্যম দামের শাড়ী দিন, পুরুষকে মধ্যম দামের লুঙ্গি-গেঞ্জি দিন। খাদ্য ও বস্ত্র দানে অক্ষম হলে তবেই তিনদিন রোজা রাখুন। খাদ্য দেওয়ার ক্ষমতা ও উপায় থাকলে রোজা রাখলে কাফফারা আদায় হবে না।

তথ্যসূত্র:

  • দ্বীনী প্রশ্নোত্তর - শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইযী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ