Ticker

5/recent/ticker-posts

আসবাবুন নুযূল

কুরআন হলো স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষের জন্য সার্বজনীন পথনির্দেশনা- যা তাদেরকে নিজ স্রষ্টা ও সকল সৃষ্টির সাথে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। তবে কুরআন নাযিল হয়েছে এমন এক ব্যক্তির নিকট যিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে জীবন যাপন করেছেন। তাই স্বাভাবিক কারণেই, মাঝেমধ্যে এমনসব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে যেগুলোর সমাধানের ব্যাপারে নবী (সা:) এর অনুসারীদের কোন ধারণা ছিল না; কিংবা অনেক সময় তারা নবী (সা:) কে এমন অনেক ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন, যে বিষয়ে তাদের কোন সুস্পষ্ট জ্ঞান ছিল না। এসব প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে নবী (সা:) এর নিকট কুরআনের বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছে। এসব ঘটনাপ্রবাহকে ওহী নাযিলের প্রসঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়; আর এগুলোকে বলা হয় 'আসবাবুন নুযূল' বা ওহী নাযিলের নেপথ্য কারণসমূহ।

কুরআন বর্ণিত বহু আইনের তাৎপর্য অনুধাবন করার ক্ষেত্রে ওহীর নেপথ্য কারণের জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৃষ্টান্তস্বরূপ- ইবনু আব্বাস (রা:) বর্ণনা করেন যে, হিলাল ইবনু উমাইয়া নবী (সা:) এর নিকট গিয়ে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে শুরাইক ইবনু শাহমার সাথে ব্যভিচারের অভিযোগ দায়ের করেন। নবী (সা:) তাকে বললেন, 'প্রমাণ (অর্থাৎ চারজন সাক্ষী) নিয়ে এসো, অন্যথায় তোমাকে তোমার পিঠে (আশিটি বেত্রাঘাতের) শাস্তি নিতে হবে'। হিলাল জবাব দিলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল (সা:) আমাদের কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর উপর অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পায়, তাহলে কি সে ওখান থেকে চুপচাপ চলে গিয়ে সাক্ষী খুঁজে বেড়াবে?' আল্লাহর রাসূল পুনরায় বললেন, 'প্রমাণ নিয়ে এসো, অন্যথায় তোমাকে শাস্তি নিতে হবে।' হিলাল তখন বললেন, 'ঐ সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, আমি সত্যি কথাই বলছি। আর আমার পিঠকে শাস্তি থেকে বাঁচাতে আল্লাহ্ অবশ্যই কিছু না কিছু নাযিল করবেন। অতঃপর জিবরীল (আ:) নিম্নোক্ত ওহী নিয়ে হাজির হন-
আর যারা নিজেদের স্ত্রীদের প্রতি অভিযোগ দায়ের করে এবং তাদের কাছে নিজেরা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন সাক্ষী থাকে না, এরূপ ব্যক্তির সাক্ষ্য হবে এই যে, সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী এবং পঞ্চমবার বলবে যে, যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহর লানত। আর স্ত্রীর শাস্তি রহিত হয়ে যাবে যদি সে আল্লাহর কসম খেয়ে চার বার সাক্ষ্য দেয় যে, এ ব্যক্তি (তার স্বামী) অবশ্যই মিথ্যাবাদী; এবং পঞ্চমবার বলে যে, যদি এ ব্যক্তি (তার স্বামী) সত্যবাদী হয় তবে তার ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসুক (সূরা নূর, আয়াত: ৬-৯)। -[সহীহুল বুখারী, খণ্ড ৬, হা: ২৭১]



 প্রাসঙ্গিক বিষয়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ